নওগাঁর রাণীনগরে মুরগী পালনের জন্য হাজার হাজার টাকা খরচে সরকারী ভাবে তৈরি আধুনিক সেড থাকলেও নেই কোন মুরগী। বছরের পর বছর সেড বৃষ্টি আর রোদ নষ্ট হলেও পালন করা হয় না মুরগী। এতে করে সরকারের গৃহিত লক্ষ্য জলে ভেসে যাচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। আগামীতে এই ধরণের সুবিধা প্রকৃত মানুষদের প্রদান করে সরকারের গৃহিত উদ্যোগ ও পদক্ষেপকে শতভাগ সফল করার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন উপজেলার সচেতন মহল।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারি পরবর্তি সময়ে উপজেলার বড়গাছা ও কাশিমপুর ইউনিয়নের ৬০টি অসহায় ও দরিদ্র পরিবারকে মুরগী লালন-পালন করার জন্য স্ক্যাভেঞ্জিং পোল্ট্রির পরিবেশ বান্ধব সেড নির্মাণ করে দেয়া হয়। প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) অধিনে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। প্রতিটি সেড নির্মাণে সরকারের খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। প্রতিটি সেডে ৪৫টি করে পোল্ট্রি মুরগী লালন-পালন করা সম্ভব। কিন্তু পরবর্তিতে অনেক সুবিধাভোগীরা পোল্ট্রি মুরগী লালন-পালন করা ঝামেলা মনে করার কারণে এমন দামী সেড বর্তমানে বৃষ্টি আর রোদে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের মাঝে এমন প্রকল্প প্রদান না করায় সরকারের গৃহিত লক্ষ্য জলে ভেসে যাওয়ার সঙ্গে প্রকল্পের নামে বরাদ্দকৃত লক্ষ লক্ষ টাকা নষ্ট হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে উপজেলার বড়গাছা ইউনিয়নের আকনা-বাঁশবাড়িয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায় যে বানু বিবি নামক একজন সুবিধাভোগীর নামে একটি সেড পাকা সড়কের পাশে ফাঁকা পড়ে আছে। স্থানীয়রা জানান যে বানু বিবির নিজস্ব কোন জায়গা না থাকার কারণে সেডটি তৈরি করে পাকা সড়কের পাশে রেখে গেছে। প্রায় বছর খানেক পার হলেও সেডে মুরগী লালন পালন করার কোন দৃশ্য আজ পর্যন্ত দেখা যায়নি। সেডটি যদি যারা প্রকৃত হাঁস-মুরগী লালন-পালন করে তাদের যদি দেওয়া হতো তাহলে সেডটি কাজে লাগতো এবং সরকারের গৃহিত লক্ষ্য শতভাগ সফল হতো বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বাঁশবাড়িয়া গ্রামের পিজি সদস্য বানু বিবি জানান, পোল্ট্রি মুরগী কিনে পালন করার মতো আমার ক্ষমতা নেই। অফিসের লোকজন এসে আমাকে এই ঘর দিয়ে গেছে। আমি একা মানুষ আমি কিভাবে ওই সেডে মুরগী কিনে পালন করবো।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: রফি ফয়সাল তালুকদার বলেন, ওই সময় প্রকল্পটির সবকিছু বাস্তবায়ন করেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সেড নির্মাণের সকল খরচ সুবিধাভোগীর নামে খোলা মোবাইল এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা প্রদান করা হয়েছে আর আমরা মাত্র দেখভাল করে সেডটি তৈরি করে দিয়েছি। পরবর্তিতে মুরগী কেনার জন্যও অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও তা আর দেয় হয়নি। ফলে অনেকেই মুরগী কেনার অজুহাতে সেডটি ফেলে রেখেছে। এতে করে আমাদের করার কিছু নেই।


























