রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় গরুর লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে গত এক মাসে কমপক্ষে ২০টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আক্রান্ত হয়েছে পাঁচ শতাধিক গরু। জানা যায়, মিঠাপুকুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের পরামর্শে ভ্যাকসিন ও ঔষধ দিয়েও রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে উপজেলার কৃষক ও খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকেও ভাবিয়ে তুলেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ইতোমধ্যে আক্রান্ত গরুর রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। উপজেলার জানকীপুর গ্রামের রহমত আলীর ১১ মণ ওজনের ফ্রিজিয়ান ষাঁড় গরুর ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এছাড়াও ওই গ্রামের পূর্বপাড়ায় পাড়ার রাজু মিয়ার একটি গরু, নাওফেল মিয়ার দুটি, রবিউলের দুটি, রাজ্জকের একটি ও বাদলের একটি গরু মারা যায়। এক মাসের ব্যবধানে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কমপক্ষে ২০টি গরু ক্ষুরারোগে মারা যায়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, মিঠাপুকুর উপজেলায় বাণিজ্যিক খামার রয়েছে ১৫০টি। এছাড়া পারিবারিক খামার রয়েছে প্রায় ২ হাজার। এসব খামাওে প্রায় ৮০ হাজার গরু রয়েছে। গত তিন-চার সপ্তাহ আগে উপজেলায় গরুর ক্ষুরা ও লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। জানকীপুর গ্রামের রজ্জব আলী বলেন, এক সপ্তাহ ধরে তার গরুটি ক্ষুরারোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকটা সেরে গিয়েছিল। গত সোমবার গরুকে পানি খাওয়ানোর পর অসুস্থ হয়ে পড়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যায়। তিনি বলেন, গত কোরবানির ঈদে গরুটি সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দাম বলেছিল।
ইচ্ছা ছিল সামনের কোরবানির ঈদে গরুটি বিক্রয় করবো। কিন্তু আমার সব শেষ হয়ে গেল। একই গ্রামের ধীরেন চন্দ্র বলেন, গত মঙ্গলবার সকালে ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি বকনা বাছুর ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। গরুটিকে ভ্যাকসিন ও ঔষধ দিয়েও কোনো কিছুতেই কাজ হলো না। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: একরামুল হক মন্ডল বলেন, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে এ রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ভ্যাকসিনসহ মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টি, উঠান বৈঠক ও মেডিক্যাল ক্যাম্প করে রোগের প্রতিকার সম্পর্কে অবগত করা হচ্ছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এ রোগটি ক্ষুরা ও লাম্পি স্কিন রোগের নতুন ধরন। আমরা ঊর্ধ্বতন প্রাণিস¤পদ বিভাগের বিশেষজ্ঞ দলকে অবহিত করেছি। তারা এসে আক্রান্ত গরুর রক্ত সংগ্রহ করে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারব এর আসল কারণ।


























