১২:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রংপুরে চরাঞ্চলে জনপ্রিয় হচ্ছে ঘোড়ার গাড়ী

রংপুরে তিস্তা-ঘাঘটসহ বিভিন্ন নদ-নদী বেষ্টিত চরাঞ্চল রয়েছে। এসব নদ-নদীকে কেন্দ্র অসংখ্য চর জেগে উঠেছে। শুকনো মৌসুমে চরে কৃষকরা বিভিন্ন ফসল চাষ করেন। একদশক আগেও চরের উৎপাদিত ফসল কিংবা কোন পণ্য আনা নেয়ার জন্য ঘোড়াগাড়ির কথা চিন্তাই করা যেত না। চরের উৎপাদিত ফসল পরিবহন করা হলো নৌকায়। এখন আর নৌকায় নয় চরের ফসল পরিবহনের জন্য ঘোড়া গাড়ী একমাত্র ভরসা। চরাঞ্চলে ঘোড়ার গাড়ী জনপ্রিয় হওয়ায় কৃষকরা খুব সজসেই পণ্য পরিবহন করতে পারছে। অনেকে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। রংপুরে গঙ্গাচড়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭টি ইউনিয়নই হচ্ছে তিস্তা নদীবেষ্টিত। কাউনিয়া এবং পীরগাছা উপজেলায় রয়েছে অর্ধশতের বেশি চরাঞ্চল। কাউনিয়া উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তিস্তা নদী বেষ্টিত ১৭টি চরাঞ্চলের চর নাজিরদহ, চর সাব্দি, গোপিডাঙ্গা, আরাজি হরিশ্বর, চর গদাই, চর পাঞ্জরভাঙ্গা, তালুকশাহাবাজ, শনশনাটারি,শুভাঘাট, চর গনাই, হরিচরন শর্মা, গনাই, চর বিশ্বনাথ, হয়বতখাঁ চর, টাপুর চর, সদরা তালুক, চর আজমখাঁ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র বাহন ঘোড়ার গাড়ী। বালু আর কাঁদা রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা, ট্রলি, ট্রাকসহ অনান্য বাহন যেতে পারে না সেই সকল রাস্তায় ঘোড়া গাড়ীর কদর বেড়েছে। গঙ্গাচড়া উপজেলার সিংহ ভাগ রবি শস্য, ধান, পাট, আলু, বাদাম, ভুট্টা, পিয়াজ, মরিচ, রসুন, ডাল, কুমড়া এসব অর্থকারী ফসল চরাঞ্চলেই বেশী উৎপাদন হয়। কৃষকের উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে যেতে না পারায় কম দামে ফড়িয়া দালালদের কাছে বাধ্য হয়ে চরেই বিক্রি করতে হতো। বর্তমানে ঘোড়ার গাড়ীতে কৃষকগণ উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে
ন্যায্য দামে বিক্রয় করছে। গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়ায় এসব চরাঞ্চলে প্রায় ছয় শতাধিক ঘোড়া গাড়ী রয়েছে। কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের গোপিঙ্গা গ্রামের ঘোড়ার গাড়ী চালক আব্দুর রহমান বলেন, এক সময় তার সংসার চলতো না, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছে পরিবারের সদস্যদের। ঘোড়ার গাড়ীর চালানোর পর থেকে তার সংসারে এখন তেমন আর অভাব নেই। একই উপজেলার পল্লীমারী একতা গ্রামের ঘোড়ার গাড়ীর চালক গনি মিয়া বলেন, ৫ বছর থেকে তিনি ঘোড়ার গাড়ী চালান। দৈনিক আয় হচ্ছে ৭ থেকে ৮শত টাকা। আলুর মৌসুমে আয় আরও বেশী হয়। হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান পলাশ বলেন, ইউনিয়নে দেড়শতাধিক ঘোড়াে গাড়ী রয়েছে। বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ইউনিয়নে ৮০ থেকে ৯০টি ঘোড়ার হাড়ী আছে। টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, তার ইউনিয়নে শতাধিক ঘোড়ার গাড়ী আছে। শহীদবাগ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সোলেমান মিয়া বলেন, তার ইউনিয়নে ৫০ থেকে ৬০টি ঘোড়ার গাড়ী রয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

রংপুরে চরাঞ্চলে জনপ্রিয় হচ্ছে ঘোড়ার গাড়ী

আপডেট সময় : ১০:৫৯:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪

রংপুরে তিস্তা-ঘাঘটসহ বিভিন্ন নদ-নদী বেষ্টিত চরাঞ্চল রয়েছে। এসব নদ-নদীকে কেন্দ্র অসংখ্য চর জেগে উঠেছে। শুকনো মৌসুমে চরে কৃষকরা বিভিন্ন ফসল চাষ করেন। একদশক আগেও চরের উৎপাদিত ফসল কিংবা কোন পণ্য আনা নেয়ার জন্য ঘোড়াগাড়ির কথা চিন্তাই করা যেত না। চরের উৎপাদিত ফসল পরিবহন করা হলো নৌকায়। এখন আর নৌকায় নয় চরের ফসল পরিবহনের জন্য ঘোড়া গাড়ী একমাত্র ভরসা। চরাঞ্চলে ঘোড়ার গাড়ী জনপ্রিয় হওয়ায় কৃষকরা খুব সজসেই পণ্য পরিবহন করতে পারছে। অনেকে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। রংপুরে গঙ্গাচড়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭টি ইউনিয়নই হচ্ছে তিস্তা নদীবেষ্টিত। কাউনিয়া এবং পীরগাছা উপজেলায় রয়েছে অর্ধশতের বেশি চরাঞ্চল। কাউনিয়া উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তিস্তা নদী বেষ্টিত ১৭টি চরাঞ্চলের চর নাজিরদহ, চর সাব্দি, গোপিডাঙ্গা, আরাজি হরিশ্বর, চর গদাই, চর পাঞ্জরভাঙ্গা, তালুকশাহাবাজ, শনশনাটারি,শুভাঘাট, চর গনাই, হরিচরন শর্মা, গনাই, চর বিশ্বনাথ, হয়বতখাঁ চর, টাপুর চর, সদরা তালুক, চর আজমখাঁ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র বাহন ঘোড়ার গাড়ী। বালু আর কাঁদা রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা, ট্রলি, ট্রাকসহ অনান্য বাহন যেতে পারে না সেই সকল রাস্তায় ঘোড়া গাড়ীর কদর বেড়েছে। গঙ্গাচড়া উপজেলার সিংহ ভাগ রবি শস্য, ধান, পাট, আলু, বাদাম, ভুট্টা, পিয়াজ, মরিচ, রসুন, ডাল, কুমড়া এসব অর্থকারী ফসল চরাঞ্চলেই বেশী উৎপাদন হয়। কৃষকের উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে যেতে না পারায় কম দামে ফড়িয়া দালালদের কাছে বাধ্য হয়ে চরেই বিক্রি করতে হতো। বর্তমানে ঘোড়ার গাড়ীতে কৃষকগণ উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে
ন্যায্য দামে বিক্রয় করছে। গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়ায় এসব চরাঞ্চলে প্রায় ছয় শতাধিক ঘোড়া গাড়ী রয়েছে। কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের গোপিঙ্গা গ্রামের ঘোড়ার গাড়ী চালক আব্দুর রহমান বলেন, এক সময় তার সংসার চলতো না, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছে পরিবারের সদস্যদের। ঘোড়ার গাড়ীর চালানোর পর থেকে তার সংসারে এখন তেমন আর অভাব নেই। একই উপজেলার পল্লীমারী একতা গ্রামের ঘোড়ার গাড়ীর চালক গনি মিয়া বলেন, ৫ বছর থেকে তিনি ঘোড়ার গাড়ী চালান। দৈনিক আয় হচ্ছে ৭ থেকে ৮শত টাকা। আলুর মৌসুমে আয় আরও বেশী হয়। হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান পলাশ বলেন, ইউনিয়নে দেড়শতাধিক ঘোড়াে গাড়ী রয়েছে। বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ইউনিয়নে ৮০ থেকে ৯০টি ঘোড়ার হাড়ী আছে। টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, তার ইউনিয়নে শতাধিক ঘোড়ার গাড়ী আছে। শহীদবাগ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সোলেমান মিয়া বলেন, তার ইউনিয়নে ৫০ থেকে ৬০টি ঘোড়ার গাড়ী রয়েছে।