০৬:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের কমপ্লিট শাটডাউন

একাডেমিক ভবন, অডিটরিয়াম, আবাসিক হল নির্মাণ, শিক্ষক নিয়োগ, নতুন বিভাগ চালু, যাতায়াতের জন্য বাসের সংস্থান, নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বক্স স্থাপনসহ ৩৭ দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেছে রংপুর কারমাইকেল কলেজে শিক্ষার্থীরা। সৃষ্ট সংকট সমাধানে শিক্ষা উপদেষ্টা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে কারমাইকেল কলেজে আসার জন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আবারো আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সাথে দাবি আদায়ে বুধবার রেল ও সড়কপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রধান ফটক বন্ধ করে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাদের দাবি বাস্তবায়নে শিক্ষা উপদেষ্টা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ক্যাম্পাসে না আসা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এদিকে গত দুই দিনের ন্যায় তৃতীয় দিনেও কলেজ ক্যাম্পাস এলাকায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিল। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। গত সোমবার সকাল ৯টা থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা কলেজের প্রধান প্রবেশসহ সকল বিভাগ ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা কলেজ প্রশাসনকে ২৫ দফা এবং শিক্ষা উপদেষ্টা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ১২ দফা দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বছরের পর বছর শ্রেণিকক্ষে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার অভাব, নতুন বিভাগ সংযোজনের প্রয়োজন, পর্যাপ্ত বাস সংকট, ছাত্রী বিশ্রামাগারের অনুপযুক্ত পরিবেশ, নিরাপত্তাহীনতা ও আইসিটি সুবিধার ঘাটতি রয়েছে। শিক্ষার্থী বকুল রায় বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কলেজের নানাবিধ সমস্যা ও সংকটের কথা প্রশাসনকে জানানোর পরও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়েই সকল শিক্ষার্থী মিলে আন্দোলনে নেমেছি। কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বোরহান বলেন,আন্দোলন ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য হাসিল কিংবা স্বার্থে হচ্ছে না। এটি কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দীর্ঘদিনের দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হওয়ার প্রেক্ষিতে হচ্ছে। শতবর্ষী ক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এভাবে পিছিয়ে রেখে শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ কলেজের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর এবং শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। লিখিত আকারে সব সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের পক্ষে যে দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেগুলো আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেব। আর যেসব দাবি আমাদের কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছে, সেগুলো স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

রংপুরে বাসের ধাক্কায় ইজিবাইক চালক নিহত, বাসচালক আটক

রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের কমপ্লিট শাটডাউন

আপডেট সময় : ০৮:২৯:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

একাডেমিক ভবন, অডিটরিয়াম, আবাসিক হল নির্মাণ, শিক্ষক নিয়োগ, নতুন বিভাগ চালু, যাতায়াতের জন্য বাসের সংস্থান, নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বক্স স্থাপনসহ ৩৭ দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেছে রংপুর কারমাইকেল কলেজে শিক্ষার্থীরা। সৃষ্ট সংকট সমাধানে শিক্ষা উপদেষ্টা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে কারমাইকেল কলেজে আসার জন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আবারো আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সাথে দাবি আদায়ে বুধবার রেল ও সড়কপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রধান ফটক বন্ধ করে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাদের দাবি বাস্তবায়নে শিক্ষা উপদেষ্টা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ক্যাম্পাসে না আসা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এদিকে গত দুই দিনের ন্যায় তৃতীয় দিনেও কলেজ ক্যাম্পাস এলাকায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিল। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। গত সোমবার সকাল ৯টা থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা কলেজের প্রধান প্রবেশসহ সকল বিভাগ ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা কলেজ প্রশাসনকে ২৫ দফা এবং শিক্ষা উপদেষ্টা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ১২ দফা দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বছরের পর বছর শ্রেণিকক্ষে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার অভাব, নতুন বিভাগ সংযোজনের প্রয়োজন, পর্যাপ্ত বাস সংকট, ছাত্রী বিশ্রামাগারের অনুপযুক্ত পরিবেশ, নিরাপত্তাহীনতা ও আইসিটি সুবিধার ঘাটতি রয়েছে। শিক্ষার্থী বকুল রায় বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কলেজের নানাবিধ সমস্যা ও সংকটের কথা প্রশাসনকে জানানোর পরও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়েই সকল শিক্ষার্থী মিলে আন্দোলনে নেমেছি। কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বোরহান বলেন,আন্দোলন ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য হাসিল কিংবা স্বার্থে হচ্ছে না। এটি কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দীর্ঘদিনের দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হওয়ার প্রেক্ষিতে হচ্ছে। শতবর্ষী ক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এভাবে পিছিয়ে রেখে শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ কলেজের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর এবং শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। লিখিত আকারে সব সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের পক্ষে যে দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেগুলো আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেব। আর যেসব দাবি আমাদের কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছে, সেগুলো স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

এমআর/সবা