০৬:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে বাসায় তীব্র গ্যাসের সংকট

চট্টগ্রামে বাসা-বাড়িতে গ্যাস সংকট তীব্র হয়ে  উঠেছে। রাত দিন সমানে গ্যাস লাইনে গ্যাস সরবরাহ না থাকায় দৈনন্দিন রান্না-বান্নার কাজ সারতে সীমাহীন ভোগান্তিতে রয়েছেন নগরবাসী। গ্রাম অঞ্চলের গ্যাস লাইনে গ্যাস প্রেশার থাকলেও বন্দর নগরী শহরের গ্যাস লাইনে গ্যাস না থাকার ঘটনা এখন নিত্যদিনের।

গত মঙ্গলবার ও বুধবার শহরের বেশীরভাগ এলাকায় লাইনে গ্যাস না থাকায় এসব এলাকায় রান্নার কাজ হয়নি অনেক বাসা-বাড়ীতে। ভুক্তভোগীরা হোটেল থেকে খাবার সংগ্রহ করেছেন। আবার অনেকে গ্যাস সিলিণ্ডারসহ বিকল্প জ্বালানী ব্যবহার করে খাবারসহ আনুষাঙ্গকি কাজ সামলে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগি এলাকার লোকজন।

বন্দরনগরীর বহদ্দারহাট, হেমসেন লেইন, কাজীর দেউরী, চকবাজার, অক্সিজেন, আসকার দীঘির পাড়, দক্ষিণ খুলশী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গ্যাস সংকটের ভয়াবহ দৃশ্য। আগাম কোন বার্তা ছাড়াই বাসা বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় রান্নাবান্নাসহ অন্যান্য কাজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এইসব এলাকার বাসিন্দারা।

ভুক্তভোগিরা সবুজ বাংলাকে জানান,  সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গ্যাস  সারাদিন এবং সন্ধ্যা পেরিয়ে কোনো কোনো এলাকায় গ্যাস আসে রাত ১১টা নাগাদ। আবার কোনো কোনো এলাকায় রাত ১২টাতেও লাইনে গ্যাসের চাপ পাওয়া যায় না বলে ভুক্তভোগিদের অভিযোগ। বহাদ্দারহাট কালারপোল এলাকার বাসিন্দা রোকসানা বেগম জানান,  আমাদের এলাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। একই ভাবে বিকাল থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত গ্যাস থাকেনা। তাই রান্নাবান্না করতে সমস্যা হচ্ছে।

চেরাগী পাহাড়ের বাসিন্দা মিত্রা বিশ্বাস  সবুজ বাংলাকে জানান, গ্যাস না পাওয়ায় কয়েকদিন ধরে হোটেল থেকে খাবার কিনে এনে পরিবারের সদস্যদের খাবার সারতে হচ্ছে। গ্যাস সংকট তীব্র হওয়ায় চট্টগ্রামে গ্যস নির্ভর যানবাহন ও চালকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গ্যাস প্রেশার না থাকায় সিএনজি ফিলিং ষ্টেশন গুলোতে গাড়ীতে গ্যাস দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। গভীর রাতে গ্যাস প্রেশার স্বাভাবিক হলে সিএনজি ফিলিং ষ্টেশন গুলোতে গ্যাস নেয়ার জন্য বিভিন্ন যানবাহনের চাপ বাড়ে। এসময় ফিলিং ষ্টেশন গুলোর কর্মকর্তা – কর্মচারিদের শৃংখলা ধরে রাখতে বেশ চাপে পড়তে হয় বলে সংশ্লষ্টিদের অভিযোগ। গত দেড় মাসের অধিক সময় ধরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় চলছে তীব্র গ্যাস সংকট। এই সংকটে বাসা – বাড়ীতে প্রতিদিনের খাওয়ার সময় ও সিডিউল নষ্ট হয়ে বৃদ্ধ ও শিশুদের নিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ভুক্তভোগিদের।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) আমিনুর রহমান সবুজ  বাংলাকে জানান , দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে আমাদের গ্যাস নিতে হয়। একটি এলএনজি টার্মিনালে সংস্কার কাজ চলমান থাকায় চাহিদার তুলনায় অনেক কম গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছি।

কেজিডিসিএল এর হিসেবে, সার কারখানা, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বাসাবাড়ি মিলিয়ে প্রতিদিনি গড়ে ৩২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে চট্টগ্রামে। সেখানে গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুটের মত। তিনি আরো জানান, আগামী  দুই-তিন দিনের মধ্য গ্যাস সরবরাহ অনেকটা স্বাভাবিক হবে এবং সংকট কেটে যাবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস, ভরি ছাড়াল দুই লাখ ২৭ হাজার

চট্টগ্রামে বাসায় তীব্র গ্যাসের সংকট

আপডেট সময় : ০৬:২৮:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৪

চট্টগ্রামে বাসা-বাড়িতে গ্যাস সংকট তীব্র হয়ে  উঠেছে। রাত দিন সমানে গ্যাস লাইনে গ্যাস সরবরাহ না থাকায় দৈনন্দিন রান্না-বান্নার কাজ সারতে সীমাহীন ভোগান্তিতে রয়েছেন নগরবাসী। গ্রাম অঞ্চলের গ্যাস লাইনে গ্যাস প্রেশার থাকলেও বন্দর নগরী শহরের গ্যাস লাইনে গ্যাস না থাকার ঘটনা এখন নিত্যদিনের।

গত মঙ্গলবার ও বুধবার শহরের বেশীরভাগ এলাকায় লাইনে গ্যাস না থাকায় এসব এলাকায় রান্নার কাজ হয়নি অনেক বাসা-বাড়ীতে। ভুক্তভোগীরা হোটেল থেকে খাবার সংগ্রহ করেছেন। আবার অনেকে গ্যাস সিলিণ্ডারসহ বিকল্প জ্বালানী ব্যবহার করে খাবারসহ আনুষাঙ্গকি কাজ সামলে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগি এলাকার লোকজন।

বন্দরনগরীর বহদ্দারহাট, হেমসেন লেইন, কাজীর দেউরী, চকবাজার, অক্সিজেন, আসকার দীঘির পাড়, দক্ষিণ খুলশী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গ্যাস সংকটের ভয়াবহ দৃশ্য। আগাম কোন বার্তা ছাড়াই বাসা বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় রান্নাবান্নাসহ অন্যান্য কাজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এইসব এলাকার বাসিন্দারা।

ভুক্তভোগিরা সবুজ বাংলাকে জানান,  সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গ্যাস  সারাদিন এবং সন্ধ্যা পেরিয়ে কোনো কোনো এলাকায় গ্যাস আসে রাত ১১টা নাগাদ। আবার কোনো কোনো এলাকায় রাত ১২টাতেও লাইনে গ্যাসের চাপ পাওয়া যায় না বলে ভুক্তভোগিদের অভিযোগ। বহাদ্দারহাট কালারপোল এলাকার বাসিন্দা রোকসানা বেগম জানান,  আমাদের এলাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। একই ভাবে বিকাল থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত গ্যাস থাকেনা। তাই রান্নাবান্না করতে সমস্যা হচ্ছে।

চেরাগী পাহাড়ের বাসিন্দা মিত্রা বিশ্বাস  সবুজ বাংলাকে জানান, গ্যাস না পাওয়ায় কয়েকদিন ধরে হোটেল থেকে খাবার কিনে এনে পরিবারের সদস্যদের খাবার সারতে হচ্ছে। গ্যাস সংকট তীব্র হওয়ায় চট্টগ্রামে গ্যস নির্ভর যানবাহন ও চালকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গ্যাস প্রেশার না থাকায় সিএনজি ফিলিং ষ্টেশন গুলোতে গাড়ীতে গ্যাস দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। গভীর রাতে গ্যাস প্রেশার স্বাভাবিক হলে সিএনজি ফিলিং ষ্টেশন গুলোতে গ্যাস নেয়ার জন্য বিভিন্ন যানবাহনের চাপ বাড়ে। এসময় ফিলিং ষ্টেশন গুলোর কর্মকর্তা – কর্মচারিদের শৃংখলা ধরে রাখতে বেশ চাপে পড়তে হয় বলে সংশ্লষ্টিদের অভিযোগ। গত দেড় মাসের অধিক সময় ধরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় চলছে তীব্র গ্যাস সংকট। এই সংকটে বাসা – বাড়ীতে প্রতিদিনের খাওয়ার সময় ও সিডিউল নষ্ট হয়ে বৃদ্ধ ও শিশুদের নিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ভুক্তভোগিদের।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) আমিনুর রহমান সবুজ  বাংলাকে জানান , দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে আমাদের গ্যাস নিতে হয়। একটি এলএনজি টার্মিনালে সংস্কার কাজ চলমান থাকায় চাহিদার তুলনায় অনেক কম গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছি।

কেজিডিসিএল এর হিসেবে, সার কারখানা, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বাসাবাড়ি মিলিয়ে প্রতিদিনি গড়ে ৩২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে চট্টগ্রামে। সেখানে গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুটের মত। তিনি আরো জানান, আগামী  দুই-তিন দিনের মধ্য গ্যাস সরবরাহ অনেকটা স্বাভাবিক হবে এবং সংকট কেটে যাবে।