০৬:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মীরসরাইয়ে শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত চাষিরা

মৌসুম ভেদে সবজি চাষে ব্যস্ত থাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা। শীতের মৌসুমকে কেন্দ্র করে কৃষকরা চাষ করছে নানা প্রজাতির শাক ও সবজি। বাজারের চাহিদা ও লাভের কথা মাথায় রেখে সবজি চাষে স্বপ্ন দেখছেন মীরসরাই উপজেলার চাষিরা। সম্প্রতি উপজেলার করেরহাটে ফেনী নদী তীরে ও বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সাথে আলাপে জানা যায় শীতকালীন সবজি চাষের হালচাল।

শীতকালীন সবজির বাজারে যোগান দিতে আগে থেকেই কৃষকরা মাঠে লেগে আছেন। এরই মধ্যে নতুন আলু, বেগুন শিম, মূলা, মরিচ, লাউ, ফুলকপিসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। কেউ কেউ ইতিমধ্যে বাজারজাতও করেছেন, আবার অনেকেই দু’এক সপ্তাহ পর বাজারে তোলার অপেক্ষায়।

চাষি পারভেজ আহমেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি ৪ একর জমিতে এবার শীতকালীন চাষাবাদ করেছেন। তিনি বলেন, প্রতিবছর শীতকালীন সবজির চাষ করে থাকেন। যদি বাজারে ভালো দাম পাই তাহলে আমি এবারো লাভবান হবো আশাকরি। তিনি আরও  বলেন, অনেক সময় যে পরিমাণ অর্থ ব্যায় করি তা ওঠে আসে না। ফলে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।

একই চরের কৃষক জহিরুল হক সবুজ বাংলাকে বলেন, আমি এবার মিষ্টি আলুর চাষ করেছি। ভালো ফলন ও দাম পাওয়াতে অন্য সবজির তুলনায় আমি মিষ্টি আলু চাষ করে থাকি। এবছর দুই একর জমিতে প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ করেছি। বাজারে নায্য মূল্য পেলে তা পুষে আসবে। তিনি আশা করেন প্রতিবারের মতো এবারো মিষ্টি আলুতে লাভবান হবেন।

শীত মৌসুমের শেষের দিকে বাজারে আসবে করলা, মিষ্টি কুমড়া, লাল আলু। মৌসুমের শেষের দিকের বাজার ধরতে কৃষক আবুল কালাম ৩ একর জমিতে প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। তিনি বলেন, আলু, মিষ্টি কুমড়া এসব সবজি উচিত মূল্য পেলে বাজারে ছাড়বো। যাতে খরচ করা টাকা তুলে আনতে পারি।

গ্রাম-গঞ্জে শীতকালীন সবজিতে বেশি লাভের আশায় কৃষকরা নানান সবজির চাষ করে থাকেন। তবে নায্য মূল্য না পেলে কৃষকদের পড়তে হয় বিরাট লোকসানের মুখে। এসব চিন্তা করে অনেকেই মৌসুমি চাষের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। কেউ কেউ মৌসুমি সবজির বাহিরে ১২ মাস ধরে পাওয়া যায় এমন সবজির চাষাবাদও করছেন।

কৃষক নাছির উদ্দিন সবুজ বাংলাকে বলেন, এবার ২ একর জমিতে লাউ, মরিচ ও মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছি। যা ১২ মাসই বাজারে পাওয়া যায়। এসব সবজির চাহিদা বাজারে সবসময়ই থাকে। নায্য মূল্যে এসব সবজি বাজারজাত করে থাকি, যা অনেকসময় শীতকালীন বা মৌসুমি সবজিতে পাওয়া যায় না।

অন্যদিকে চাষি সিরাজুল ইসলাম বলেন, এখন সবজিতে রোগের ধরণ পাল্টেছে। একেক সময় একেক রোগ দেখা যায়। যা আমরা বুঝে উঠতে পারি না। এমন পরিস্থিতিতে সঠিক পরামর্শ ও অর্থের সংকটে আমরা চাষাবাদ করতে পারছি না। তাই এই বছর সবজি চাষ করিনি। সঠিক পরামর্শের অভাবে টাকা খরচ করেও সবজি চাহিদা মতো বাজারজাত করতে পারি না। টাকা লস হয়। এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা আশা করেন।

প্রায় বছর জুড়েই উপজেলার চাষিরা নানা জাতের সবজি চাষ করেন কৃষকরা। শীতের মৌসুম ছাড়াও সবজি চাষের ধুম পড়ে থাকে নৈসর্গিক মীরসরাইয়ে। উপজেলার করেরহাট ছাড়াও ইছাখালি, সাহেরখালি, ডোমখালি, কমর আলী, মঘাদিয়া, আম বাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় শীতকালীন ও মৌসুমি সবজির চাষাবাদ করছে। কৃষকরা বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শীতকালীন সবজির ফলন ভালো হবে। একইসাথে বাজারেও ভালো দাম পাবো বলে আশাবাদী।

জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

মীরসরাইয়ে শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত চাষিরা

আপডেট সময় : ১০:০৭:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৪

মৌসুম ভেদে সবজি চাষে ব্যস্ত থাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা। শীতের মৌসুমকে কেন্দ্র করে কৃষকরা চাষ করছে নানা প্রজাতির শাক ও সবজি। বাজারের চাহিদা ও লাভের কথা মাথায় রেখে সবজি চাষে স্বপ্ন দেখছেন মীরসরাই উপজেলার চাষিরা। সম্প্রতি উপজেলার করেরহাটে ফেনী নদী তীরে ও বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সাথে আলাপে জানা যায় শীতকালীন সবজি চাষের হালচাল।

শীতকালীন সবজির বাজারে যোগান দিতে আগে থেকেই কৃষকরা মাঠে লেগে আছেন। এরই মধ্যে নতুন আলু, বেগুন শিম, মূলা, মরিচ, লাউ, ফুলকপিসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। কেউ কেউ ইতিমধ্যে বাজারজাতও করেছেন, আবার অনেকেই দু’এক সপ্তাহ পর বাজারে তোলার অপেক্ষায়।

চাষি পারভেজ আহমেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি ৪ একর জমিতে এবার শীতকালীন চাষাবাদ করেছেন। তিনি বলেন, প্রতিবছর শীতকালীন সবজির চাষ করে থাকেন। যদি বাজারে ভালো দাম পাই তাহলে আমি এবারো লাভবান হবো আশাকরি। তিনি আরও  বলেন, অনেক সময় যে পরিমাণ অর্থ ব্যায় করি তা ওঠে আসে না। ফলে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।

একই চরের কৃষক জহিরুল হক সবুজ বাংলাকে বলেন, আমি এবার মিষ্টি আলুর চাষ করেছি। ভালো ফলন ও দাম পাওয়াতে অন্য সবজির তুলনায় আমি মিষ্টি আলু চাষ করে থাকি। এবছর দুই একর জমিতে প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ করেছি। বাজারে নায্য মূল্য পেলে তা পুষে আসবে। তিনি আশা করেন প্রতিবারের মতো এবারো মিষ্টি আলুতে লাভবান হবেন।

শীত মৌসুমের শেষের দিকে বাজারে আসবে করলা, মিষ্টি কুমড়া, লাল আলু। মৌসুমের শেষের দিকের বাজার ধরতে কৃষক আবুল কালাম ৩ একর জমিতে প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। তিনি বলেন, আলু, মিষ্টি কুমড়া এসব সবজি উচিত মূল্য পেলে বাজারে ছাড়বো। যাতে খরচ করা টাকা তুলে আনতে পারি।

গ্রাম-গঞ্জে শীতকালীন সবজিতে বেশি লাভের আশায় কৃষকরা নানান সবজির চাষ করে থাকেন। তবে নায্য মূল্য না পেলে কৃষকদের পড়তে হয় বিরাট লোকসানের মুখে। এসব চিন্তা করে অনেকেই মৌসুমি চাষের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। কেউ কেউ মৌসুমি সবজির বাহিরে ১২ মাস ধরে পাওয়া যায় এমন সবজির চাষাবাদও করছেন।

কৃষক নাছির উদ্দিন সবুজ বাংলাকে বলেন, এবার ২ একর জমিতে লাউ, মরিচ ও মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছি। যা ১২ মাসই বাজারে পাওয়া যায়। এসব সবজির চাহিদা বাজারে সবসময়ই থাকে। নায্য মূল্যে এসব সবজি বাজারজাত করে থাকি, যা অনেকসময় শীতকালীন বা মৌসুমি সবজিতে পাওয়া যায় না।

অন্যদিকে চাষি সিরাজুল ইসলাম বলেন, এখন সবজিতে রোগের ধরণ পাল্টেছে। একেক সময় একেক রোগ দেখা যায়। যা আমরা বুঝে উঠতে পারি না। এমন পরিস্থিতিতে সঠিক পরামর্শ ও অর্থের সংকটে আমরা চাষাবাদ করতে পারছি না। তাই এই বছর সবজি চাষ করিনি। সঠিক পরামর্শের অভাবে টাকা খরচ করেও সবজি চাহিদা মতো বাজারজাত করতে পারি না। টাকা লস হয়। এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা আশা করেন।

প্রায় বছর জুড়েই উপজেলার চাষিরা নানা জাতের সবজি চাষ করেন কৃষকরা। শীতের মৌসুম ছাড়াও সবজি চাষের ধুম পড়ে থাকে নৈসর্গিক মীরসরাইয়ে। উপজেলার করেরহাট ছাড়াও ইছাখালি, সাহেরখালি, ডোমখালি, কমর আলী, মঘাদিয়া, আম বাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় শীতকালীন ও মৌসুমি সবজির চাষাবাদ করছে। কৃষকরা বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শীতকালীন সবজির ফলন ভালো হবে। একইসাথে বাজারেও ভালো দাম পাবো বলে আশাবাদী।