কুয়াশায় ধূসর প্রান্তর, চারদিকে হলুদের সমাহার। যেদিকে চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ রঙ। মনে হয় যেন রূপকথার রাজকুমারীর গায়ে হলুদ। প্রকৃতির সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে যশোরের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। যেনো হলুদের গালিচা মোড়ানো হয়েছে। লাভজনক হওয়ায় গত মৌসুমের তুলনায় বেশি জমিতে এবার সরিষার চাষ হয়েছে। সরিষাকে ঘিরে চাষিরা রঙিন স্বপ্ন বুনছে।
জেলা কৃষি বিভাগ অফিস জানায়, এ বছর যশোর জেলায় সরিষার চাষ হয়েছে ৩০ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩শ’৬৫ হেক্টর জমি বেশি। গত মৌসুমে চাষ হয়েছিলো ২৫ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে। প্রনোদনা সুবিধার পাশাপাশি লাভজনক হওয়ায় সরিষার আবাদে ঝুঁকেছেন এখানকার চাষিরা। আবার কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারাও চাষিদের সরিষা চাষে উৎসাহিত করছেন।
চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি গ্রামের চাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, দুই বিঘা জমি লিজ নিয়ে গত দুই বছর ধরে সরিষার চাষ করছি। গতবারও ভালো ফলন হয়েছিল। নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে আরো কিছু সরিষা বিক্রি করেছিলাম। এ বছরও দুই বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। আমন ধানের জমিতে সরিষা চাষ করতে কোনো সেচ, সার ও পরিচর্যা ছাড়াই ভালো ফলন পাওয়া যায়। রামকৃষ্ণপুর গ্রামের চাষি জহির উদ্দীন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে সরিষার চাষ করছি। ফলনও ভালো হচ্ছে। নিজেদের পারিবারিক প্রয়োজন মিটিয়ে সরিষা বিক্রি করে লাভও হচ্ছে। সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার পর নিজের উৎপাদিত সরিষা ভাঙিয়ে তেল তৈরি করিয়ে নিচ্ছি। এতে অনেক সাশ্রয় হচ্ছে।
সদর উপজেলার চান্দুটিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, ২ বিঘা জমিতে তিনি সরিষার চাষ করেছে। ফলন ভালো হয়েছে। এতে তিনি খুশি।
বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা গেছে যেনো হলুদের গালিচা মোড়ানো। বিঘার পর বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন চাষিরা। ফলে প্রকৃতির সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশ। চাষিরা জানান, এবার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, সরিষা চাষের জন্য চাষিকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এসব চাষিরা বিনামূল্যে সরিষার বীজ ও তিন রকমের রাসায়নিক সার পেয়েছেন। ফলে যশোরে এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।


























