০৯:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৪৫ বছর পর ভাই-বোনের সাক্ষাৎ

দুই ভাই-বোনের কেউ একজন হারিয়ে গিয়েছিলেন এমন নয়। তার পরও দূরত্ব আর জীবনের কঠিন বাস্তবতায় ৪৫ বছর দেখা হয়নি টনি ব্যাকেট ও মেরি ডানস্ট্যানের। অথচ শৈশবে তারা কত কাছেরই না ছিলেন! অবশেষে এক আবেগঘন পরিবেশে যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডে দেখা হলো বর্তমানে ৭২ বছর বয়সি মেরি এবং ৬৯ বয়সি টনির। দেখা হতেই অশ্রুসিক্ত হয়ে তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছেন। ১৯৭৯ সালে একে অপরের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার সময় মেরি ছিলেন ২৭ বছরের তরুণী আর টনি ২৪ বছরের যুবক। মূলত বিয়ে করার পর মেরি তার স্বামীকে নিয়ে ইংল্যান্ড থেকে চলে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানেই স্থায়ী হয়েছিলেন।

 

নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একসঙ্গে দারুণ শৈশব কাটানো টনি এবং মেরি সম্প্রতি নিজেদের জীবনসঙ্গীকে হারিয়েছেন। গত বছর মারা গেছেন টনির স্ত্রী আর ২০২১ সালে মারা গিয়েছিলেন মেরির স্বামী। স্বামীকে হারানোর পরই ভাইয়ের জন্য মন কেঁদে উঠেছিল মেরির। ইংল্যান্ডে ভাইয়ের কাছে ফিরে আসার জন্য অর্থ জমাতে শুরু করেছিলেন তিনি। আর স্ত্রীকে হারিয়ে টনিও তার বোনের দেখা পেতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন।

 

টনি ব্যাকেট বলেন, আমাদের একটি দারুণ শৈশব ছিল। ছেলেবেলায় আমরা খুব কাছাকাছি ছিলাম। তার পরও কত দীর্ঘ সময় কেটে গেছে। বোনের মুখোমুখি হয়ে একেবারে নার্ভাস হয়ে গেছি। তার বাবা ছিলেন খামারের পশুপালক। আর তাঁর বোন মেরি নার্স হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। সে সময় একটি হাসপাতালে ছোটখাটো কাজ করতেন টনি নিজেও।

 

মেরি ডানস্ট্যান বলেন, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে জীবনের দীর্ঘ সময় কাটিয়ে দেওয়া দেশান্তরী হয়ে যাওয়া নিয়ে কোনো আফসোস নেই। তবে বিদেশে থেকে তিনি তার পরিবারকে খুব মিস করেছেন, বিশেষ করে টনিকে। আমরা সারা দিন টম অ্যান্ড জেরির মতো লড়াই করেছি। কিন্তু একটি দৃঢ় বন্ধন ছিল আমাদের।

 

দীর্ঘ সময় দেখা না হওয়ার জন্য দুজনেরই কিছু যুক্তিসংগত কারণ ছিল। আর্থিক টানাপড়েন ছিল টনির। তাই বহুবার পরিকল্পনা করেও তিনি অস্ট্রেলিয়ায় যেতে পারেননি। আর মেরির অর্থকষ্ট তো ছিলই পাশাপাশি তার স্বামী ছিলেন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত। এ ধরনের রোগে আক্রান্ত মানুষকে ফেলে কীভাবে তিনি ইংল্যান্ডে আসবেন! শৈশবে মেরি যে খামারবাড়ি দেখতেন, সেই বাড়িটির এখন অনেক কিছু বদলে গেছে। বাড়িটি এখন শহরের প্রধান সড়কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বদলে গেছে আরো অনেক কিছুই। তবে টনি এবং মেরির মধ্যে বন্ধন দৃঢ়ই রয়ে গেছে। টনি ও মেরির দেখা হওয়ার গল্পটি আরো কয়েকটি সাম্প্রতিক পুনর্মিলনের ঘটনাকে সামনে টেনে আনে। গত ফেব্রুয়ারিতেই জন্মের সময় আলাদা হয়ে যাওয়া যমজ দুই বোন ডিএনএ পরীক্ষার কল্যাণে এক হয়েছেন ৮১ বছর পর। একইভাবে ২০২২ সালে ৫৫ বছর পর দেখা হয়েছিল ডায়ান ওয়ার্ড এবং মেরি ম্যাকলাফলিন নামে আরো দুই বোনের।

জনপ্রিয় সংবাদ

৪৫ বছর পর ভাই-বোনের সাক্ষাৎ

আপডেট সময় : ০৭:৪৯:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

দুই ভাই-বোনের কেউ একজন হারিয়ে গিয়েছিলেন এমন নয়। তার পরও দূরত্ব আর জীবনের কঠিন বাস্তবতায় ৪৫ বছর দেখা হয়নি টনি ব্যাকেট ও মেরি ডানস্ট্যানের। অথচ শৈশবে তারা কত কাছেরই না ছিলেন! অবশেষে এক আবেগঘন পরিবেশে যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডে দেখা হলো বর্তমানে ৭২ বছর বয়সি মেরি এবং ৬৯ বয়সি টনির। দেখা হতেই অশ্রুসিক্ত হয়ে তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছেন। ১৯৭৯ সালে একে অপরের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার সময় মেরি ছিলেন ২৭ বছরের তরুণী আর টনি ২৪ বছরের যুবক। মূলত বিয়ে করার পর মেরি তার স্বামীকে নিয়ে ইংল্যান্ড থেকে চলে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানেই স্থায়ী হয়েছিলেন।

 

নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একসঙ্গে দারুণ শৈশব কাটানো টনি এবং মেরি সম্প্রতি নিজেদের জীবনসঙ্গীকে হারিয়েছেন। গত বছর মারা গেছেন টনির স্ত্রী আর ২০২১ সালে মারা গিয়েছিলেন মেরির স্বামী। স্বামীকে হারানোর পরই ভাইয়ের জন্য মন কেঁদে উঠেছিল মেরির। ইংল্যান্ডে ভাইয়ের কাছে ফিরে আসার জন্য অর্থ জমাতে শুরু করেছিলেন তিনি। আর স্ত্রীকে হারিয়ে টনিও তার বোনের দেখা পেতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন।

 

টনি ব্যাকেট বলেন, আমাদের একটি দারুণ শৈশব ছিল। ছেলেবেলায় আমরা খুব কাছাকাছি ছিলাম। তার পরও কত দীর্ঘ সময় কেটে গেছে। বোনের মুখোমুখি হয়ে একেবারে নার্ভাস হয়ে গেছি। তার বাবা ছিলেন খামারের পশুপালক। আর তাঁর বোন মেরি নার্স হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। সে সময় একটি হাসপাতালে ছোটখাটো কাজ করতেন টনি নিজেও।

 

মেরি ডানস্ট্যান বলেন, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে জীবনের দীর্ঘ সময় কাটিয়ে দেওয়া দেশান্তরী হয়ে যাওয়া নিয়ে কোনো আফসোস নেই। তবে বিদেশে থেকে তিনি তার পরিবারকে খুব মিস করেছেন, বিশেষ করে টনিকে। আমরা সারা দিন টম অ্যান্ড জেরির মতো লড়াই করেছি। কিন্তু একটি দৃঢ় বন্ধন ছিল আমাদের।

 

দীর্ঘ সময় দেখা না হওয়ার জন্য দুজনেরই কিছু যুক্তিসংগত কারণ ছিল। আর্থিক টানাপড়েন ছিল টনির। তাই বহুবার পরিকল্পনা করেও তিনি অস্ট্রেলিয়ায় যেতে পারেননি। আর মেরির অর্থকষ্ট তো ছিলই পাশাপাশি তার স্বামী ছিলেন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত। এ ধরনের রোগে আক্রান্ত মানুষকে ফেলে কীভাবে তিনি ইংল্যান্ডে আসবেন! শৈশবে মেরি যে খামারবাড়ি দেখতেন, সেই বাড়িটির এখন অনেক কিছু বদলে গেছে। বাড়িটি এখন শহরের প্রধান সড়কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বদলে গেছে আরো অনেক কিছুই। তবে টনি এবং মেরির মধ্যে বন্ধন দৃঢ়ই রয়ে গেছে। টনি ও মেরির দেখা হওয়ার গল্পটি আরো কয়েকটি সাম্প্রতিক পুনর্মিলনের ঘটনাকে সামনে টেনে আনে। গত ফেব্রুয়ারিতেই জন্মের সময় আলাদা হয়ে যাওয়া যমজ দুই বোন ডিএনএ পরীক্ষার কল্যাণে এক হয়েছেন ৮১ বছর পর। একইভাবে ২০২২ সালে ৫৫ বছর পর দেখা হয়েছিল ডায়ান ওয়ার্ড এবং মেরি ম্যাকলাফলিন নামে আরো দুই বোনের।