০৬:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লাকি ব্যাম্বুতে স্বাবলম্বী সুন্দরগঞ্জের হাফিজ

লাকি ব্যাম্বু যার বাংলা হলো ভাগ্যবান বাঁশ। কোনো কোনো দেশে একে ফ্রেন্ডশিপ বাঁশ, কোঁকড়া বাঁশ, চায়নিজ ওয়াটার ব্যাম্বু বা দেবীর দয়ার গাছসহ বিভিন্ন নামেও ডাকা হয়। লাকি ব্যাম্বুকে চীনারা সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে গণ্য করে থাকে। আর এই লাকি ব্যাম্বু চাষে লাক ফিরেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের পরান গ্রামের মো. হাফিজের। মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করা সফল এ উদ্যোক্তার উৎপাদিত লাকি ব্যাম্বু দিয়ে তৈরি টবে রাখার মতো বিভিন্ন ডিজাইন যাচ্ছে এখন দেশের গন্ডি পেরিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। যার ফলে আয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। মাত্র সাড়ে তিন বছরে ঘুচিয়েছেন তার বেকারত্ব। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, লাকি ব্যাম্বু উদ্ভিদের রং গাঢ় সবুজ বলে তা বাড়ির অন্তঃপুরে রাখলে ঘরে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং সবুজের দিকে তাকালে চোখের দৃষ্টিশক্তিও স্বাভাবিক থাকে। উদ্ভিদটিকে বাঁশ গাছ বলা হলেও এই গাছ আসলে বাঁশ প্রজাতির নয়, এটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলের লিলি প্রজাতির গাছ। সরেজমিনে দেখা যায়, চার খন্ডে বিভক্ত তিন বিঘা জমিতে তিনটি ভিন্ন রঙের ভাগ্যবান গাছ চাষ করেছেন মো. হাফিজ। কোনো অংশে চাষ করা হয়েছে সবুজ রঙের, কোনো অংশে আবার সবুজের মাঝে সাদা ডোরাকাটা, আবার কোনো অংশে লাগানো হয়েছে গাঢ় সবুজ রঙের ভাগ্যবান বাঁশ। সূর্যের আলোতে উৎপাদন হয় না বলে আধো আলো ছায়া দেওয়ার জন্য পুরো জমির ওপর উঁচু করে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে সবুজ রঙের নেট জাতীয় কাপড়। ক্ষেতে ঢুকতেই চোখ যেন আটকে যায় সবুজে ভরা ভাগ্যবান এই উদ্ভিদের নজর কারা সৌন্দর্যে। টবে রাখার মতো উপযোগী সাজানো একেকটি ডিজাইনের দাম ৭ শত থেকে ১ হাজার টাকা। কখনো বা তারও বেশি। সেই হিসাবে প্রতিবার রপ্তানিতে হাফিজের আয় হয় ২ লক্ষ ৩ লক্ষ টাকা। লাকি ব্যাম্বুতে ভাগ্য ফেরা হাফিজের পণ্য যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। হাফিজ তার সৌভাগ্য বাঁশ থেকে উৎপাদিত গৃহসজ্জার এসব পণ্য রপ্তানি করে থাকেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান, কাতার, দুবাই ও সৌদি আরবে। প্রচুর অক্সিজেন পাওয়া যায় বলে মরুভূমির এসব দেশে ভাগ্যবান বাঁশ এর কদর বেশি। সাড়ে তিন বছরে স্বাবলম্বী হয়ে উঠা তরুণ উদ্যোক্তা হাফিজ বলেন, গৃহসজ্জার জন্য তৈরি এসব পণ্য এ পর্যন্ত ওমানে পাঁচবার, কাতারে দুবার, দুবাইয়ে দুবার এবং সৌদি আরবে একবার পাঠিয়েছি। আয়ও হচ্ছে যথেষ্ট। আমার মতো যেন অন্যরাও উদ্যোক্তা হয়ে নিজে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারে সেই আশাও ব্যক্ত করেন তরুণ এই উদ্যোক্তা। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশিদুল কবির বলেন, লাকি ব্যাম্বু উদ্ভিদের রং গাঢ় সবুজ বলে তা বাড়ির অন্তঃপুরে রাখলে ঘরে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। হাফিজের মতো যেন অন্যান্য যুবক উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রামে তিন-চতুর্থাংশ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ

লাকি ব্যাম্বুতে স্বাবলম্বী সুন্দরগঞ্জের হাফিজ

আপডেট সময় : ০৫:৩৮:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪

লাকি ব্যাম্বু যার বাংলা হলো ভাগ্যবান বাঁশ। কোনো কোনো দেশে একে ফ্রেন্ডশিপ বাঁশ, কোঁকড়া বাঁশ, চায়নিজ ওয়াটার ব্যাম্বু বা দেবীর দয়ার গাছসহ বিভিন্ন নামেও ডাকা হয়। লাকি ব্যাম্বুকে চীনারা সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে গণ্য করে থাকে। আর এই লাকি ব্যাম্বু চাষে লাক ফিরেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের পরান গ্রামের মো. হাফিজের। মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করা সফল এ উদ্যোক্তার উৎপাদিত লাকি ব্যাম্বু দিয়ে তৈরি টবে রাখার মতো বিভিন্ন ডিজাইন যাচ্ছে এখন দেশের গন্ডি পেরিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। যার ফলে আয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। মাত্র সাড়ে তিন বছরে ঘুচিয়েছেন তার বেকারত্ব। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, লাকি ব্যাম্বু উদ্ভিদের রং গাঢ় সবুজ বলে তা বাড়ির অন্তঃপুরে রাখলে ঘরে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং সবুজের দিকে তাকালে চোখের দৃষ্টিশক্তিও স্বাভাবিক থাকে। উদ্ভিদটিকে বাঁশ গাছ বলা হলেও এই গাছ আসলে বাঁশ প্রজাতির নয়, এটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলের লিলি প্রজাতির গাছ। সরেজমিনে দেখা যায়, চার খন্ডে বিভক্ত তিন বিঘা জমিতে তিনটি ভিন্ন রঙের ভাগ্যবান গাছ চাষ করেছেন মো. হাফিজ। কোনো অংশে চাষ করা হয়েছে সবুজ রঙের, কোনো অংশে আবার সবুজের মাঝে সাদা ডোরাকাটা, আবার কোনো অংশে লাগানো হয়েছে গাঢ় সবুজ রঙের ভাগ্যবান বাঁশ। সূর্যের আলোতে উৎপাদন হয় না বলে আধো আলো ছায়া দেওয়ার জন্য পুরো জমির ওপর উঁচু করে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে সবুজ রঙের নেট জাতীয় কাপড়। ক্ষেতে ঢুকতেই চোখ যেন আটকে যায় সবুজে ভরা ভাগ্যবান এই উদ্ভিদের নজর কারা সৌন্দর্যে। টবে রাখার মতো উপযোগী সাজানো একেকটি ডিজাইনের দাম ৭ শত থেকে ১ হাজার টাকা। কখনো বা তারও বেশি। সেই হিসাবে প্রতিবার রপ্তানিতে হাফিজের আয় হয় ২ লক্ষ ৩ লক্ষ টাকা। লাকি ব্যাম্বুতে ভাগ্য ফেরা হাফিজের পণ্য যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। হাফিজ তার সৌভাগ্য বাঁশ থেকে উৎপাদিত গৃহসজ্জার এসব পণ্য রপ্তানি করে থাকেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান, কাতার, দুবাই ও সৌদি আরবে। প্রচুর অক্সিজেন পাওয়া যায় বলে মরুভূমির এসব দেশে ভাগ্যবান বাঁশ এর কদর বেশি। সাড়ে তিন বছরে স্বাবলম্বী হয়ে উঠা তরুণ উদ্যোক্তা হাফিজ বলেন, গৃহসজ্জার জন্য তৈরি এসব পণ্য এ পর্যন্ত ওমানে পাঁচবার, কাতারে দুবার, দুবাইয়ে দুবার এবং সৌদি আরবে একবার পাঠিয়েছি। আয়ও হচ্ছে যথেষ্ট। আমার মতো যেন অন্যরাও উদ্যোক্তা হয়ে নিজে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারে সেই আশাও ব্যক্ত করেন তরুণ এই উদ্যোক্তা। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশিদুল কবির বলেন, লাকি ব্যাম্বু উদ্ভিদের রং গাঢ় সবুজ বলে তা বাড়ির অন্তঃপুরে রাখলে ঘরে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। হাফিজের মতো যেন অন্যান্য যুবক উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারে।